আশা করি সকলে ভালো আছেন, আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে অনলাইনে খতিয়ান বের করার নিয়ম। আপনাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা খতিয়ান বের করার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান। কিন্তু কীভাবে খতিয়ান বের করতে হয় এই বিষয় সম্পর্কে জানেন না আর তাদের জন্যই মূলত আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি লেখা। আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি যদি আপনারা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত ভালোভাবে পড়েন। তাহলে আশা করি আপনারা খতিয়ান বের করার নিয়ম গুলো সম্পর্কে ভালোভাবে ধারণা পেয়ে যাবেন। তাহলে আসুন জেনে নেয়া যাক খতিয়ান বের করার নিয়ম সম্পর্কে।
বর্তমান সময়ে বলতে গেলে, এখন কিন্তু প্রায় সকল ধরনের খতিয়ান অনলাইনে থেকেই পাওয়া যাচ্ছে। নিচে একটি লিঙ্ক দিয়ে দিলাম সেখানে আপনারা ক্লিক করে তারপর আপনাদের দরকারি অপশন গুলো পূরণ করবেন এবং এরপরে আপনারা সেখানে অনুসন্ধান (সার্চ) করবেন। তারপরে কিন্তু আপনারা আপনাদের খতিয়ান অনলাইনের মাধ্যমে চেক করে নিতে পারবেন খুব সহজেই। সার্চ করার আগে নিচের নিয়মগুলো ভালোভাবে পড়ে নিন তাহলেই হবে।
অনলাইনে জমির খতিয়ান বের করার নিয়ম
আপনারা যারা প্রথম বারের মতো এই কথাটা শুনছেন, তাদের একটু অবিশ্বাস বোধ করতে পারে এবং বিশ্বাস নাও হতে পারে, যে সত্যিই কি অনলাইনে জমির খতিয়ান বের করা যায়? যারা অনেক দিন ধরে তাদের জমির খতিয়ান বের করার জন্য সরাসরি ভূমি অফিসে গিয়েছেন এবং অনেক ভুক্তভোগী হয়েছেন। তারা এই কথাটা শুনে অনেক খুশি হবেন যে, এখন বর্তমান সময়ে অনলাইন মাধ্যমে খুব সহজে খতিয়ান এক মুহূর্তের মধ্যে বের করা যেতে পারে। আপনাদের মধ্যে যাদের অভিজ্ঞতা আছে তারা কিন্তু অবশ্যই জানেন যে, অতীত সময়ে ভূমি অফিসে গিয়ে সরাসরি খতিয়ান বের করতে চাইলে সেখানে দালালদের দৌরাত্ম্য কতটুকু ছিল । কিন্তু বর্তমানে এখন অনলাইনের জগতে এই কাজ গুলো অনেক সহজ হয়ে গেছে।
আর আমরা প্রায় সময়েই শুনে থাকি যে , জমির মূল্য যে পরিমাণ, মানে জমির দাম তার থেকে খতিয়ান বের করতে গিয়ে একজন ব্যক্তির তার থেকেও বেশি পরিমাণে খরচ হয়ে যায় শুধুমাত্র দালালের খপ্পরে পড়ে। সে যাই হোক, আমরা আজকে অনলাইন জগতের মাধ্যমে জমির খতিয়ান বের করার সমস্ত এই বিষয়ের উপর ভিত্তি করে আলোচনা করবো।
আমাদের আজকের পোস্টের ভিতরে আপনাদের সাথে আলোচনা করব যে, কিভাবে আপনারা খুব সহজেই অনলাইন থেকে আপনাদের জমির খতিয়ান বের করে নিতে পারবেন মুহূর্তের ভিতর। আপনাদের সাথে যাবতীয় বিষয়গুলো তুলে ধরার চেষ্টা করব। আশা করি আমাদের আজকের পর আপনাদের জমির খতিয়ান বের করা নিয়ে আর কোন সমস্যা হবে না। নিজেরাই জমির খতিয়ান বের করে নিতে পারবেন অনলাইনের মাধ্যমে খুব সহজেই।
জমির খতিয়ান বের করার নিয়ম কিভাবে আপনারা জমির খতিয়ান বের করতে পারবেন অনলাইন হতে খুব সহজেই ? বিস্তারিত জেনে নিন –
অনলাইন থেকে যদি আপনারা খতিয়ান উত্তোলন করতে চান। তাহলে সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাদেরকে কিছু নিয়মকানুন মানতে হবে,তাহলেই আপনারা খতিয়ান উঠাতে পারবেন । অনলাইনে আবেদন করা হয়ে থাকে ডাকযোগে আপনাদের জমির খতিয়ান পাবার জন্য, অর্থাৎ আপনি এখানে যেহেতু সরাসরি ভাবে ভূমি অফিসে গিয়ে তারপরে সেখানে উপস্থিত থেকে খতিয়ানের জন্য আবেদন করছেন না। তাই অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করছেন আপনার সেই আবেদনটি যদি সম্পূর্ণ হয়ে যায়। তাহলে সেই খতিয়ান আপনার কাছে ডাকযোগে চলে আসবে খুব সহজেই।
অনলাইনের মাধ্যমে আপনি আপনার সম্পূর্ণ কাগজপত্র জমা দিবেন। আর জমা দেওয়ার কিছুদিনের ভিতরেই আপনার এই খতিয়ান সম্পন্ন হয়ে যাবে। আর অনলাইন থেকে খতিয়ান উঠানোর জন্য আপনাদের ৫০ টাকার মতো খরচ হতে পারে।
অনলাইন হতে জমির খতিয়ান বের করার নিয়ম অথবা যাচাই করার নিয়ম সম্পর্কে নিচে দেওয়া হল ভালোভাবে দেখে নিন –
এখানে ক্লিক করে খতিয়ান যাচাই করে নিন খুব সহজেই
১। সবার প্রথমে আপনাদেরকে যে কাজটি করতে হবে সেটি হল বিভাগ ঘর থেকে আপনাদের বিভাগ বাছাই করে নেবেন।
২। তারপরে আপনাদের “জেলা” নির্বাচন করবেন। একটু সহজ কথা বলতে, জেলার উপর ক্লিক করার পরে আপনাদের বিভাগীয় বা বিভাগের অধীনে সকল জেলা দেখতে পারবেন। সেখান থেকে আপনাদের নির্ধারিত জেলার নামটা সেই ঘরে নির্বাচন করে দিবেন।
৩। তারপরে “উপজেলা”র ঘরে ক্লিক করার পরে আপনাদের সকল উপজেলার নাম দেখতে পারবেন এবং সেখান থেকে আপনাদের উপজেলার নামটি সঠিকভাবে নির্বাচন করবেন।
৪। এরপরে আপনাদেরকে মৌজা ঘরে ক্লিক করার পরে আপনাদের উপজেলার যে সকল মৌজার খতিয়ান চুড়ান্ত আছে, সেই সকল মৌজার নাম খুব সহজেই দেখতে পারবেন। আপনার জমি যে মৌজায় রয়েছে সেই মৌজার নামে উপরে (ক্লিক) নির্বাচন করা লাগবে।
টোটাল চারটা ধাপে জমির খতিয়ান বের করতে পারবেন বা যাচাই করতে পারবেন নিচে সেগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করা হল দেখে নিন।
১। খতিয়ান নাম্বার যদি আপনাদের জানা থাকে তাহলে সেই খতিয়ান নাম্বার লিখে তারপরে নির্বাচন করবেন।
২। আর যদি আপনাদের খতিয়ান নাম্বার জানা না থাকে, শুধু দাগ নাম্বার জানা থাকে তাহলে দাগ নাম্বারটা খুব সতর্কতার সহিত বসিয়ে তারপরে পরবর্তী (Next) বাটনে ক্লিক করবেন।
৩। জমির মালিকের নাম অর্থাৎ আপনার যদি জানা থাকে তাহলে জমির মালিকের নামটি বসিয়ে সার্চ করে নিবেন।
৪। জমির মালিকের পিতা বা স্বামীর নাম যদি আপনাদের জানা থাকে তাহলে আপনারা জমি মালিকের পিতা/স্বামীর নাম দিয়ে ও সার্চ করে দেখতে পারবেন।
আর এই চারটা মাধ্যমের প্রত্যেকটির বাম পার্শ্বে ১টি ছোট গোল ঘর অথবা বৃত্ত আছে। উপরের চার পদ্ধতির, যে পদ্ধতিতে আপনি সার্চ করার জন্য ইচ্ছুক, তা বাম পার্শ্বের গোল ঘরে মাউস পয়েন্টার দিয়ে ক্লিক করবেন। তারপর আপনারা উপরের ৪ পদ্ধতির ভিতরে আপনারা যে পদ্ধতিতে কাজ সম্পূর্ণ করছেন তার নিচে একটি ছোট করে বক্স দেখতে পারবেন, সেই বক্সটি আপনারা পূরণ করে নিবেন।
অর্থাৎ খতিয়ান নম্বর সিলেক্ট করে দেওয়া যদি থাকে তাহলে খতিয়ান নম্বরটি বক্সে লিখবেন, দাগ নম্বর সিলেক্ট করা যদি থাকে তাহলে আপনারা দাগ নম্বরটি বক্সে লিখবেন, মালিকের নাম সিলেক্ট করে যদি থাকেন, তাহলে সেখানে আপনারা মালিকের নামটি বক্সে লিখে দিবেন, মালিকের পিতা/স্বামীর নাম সিলেক্ট করে যদি নিয়ে থাকেন তাহলে আপনারা সেখানে পিতা/স্বামীর নামটি বক্সে লিখে দেবেন তাহলেই হবে।
আপনাদেরকে নিচে থেকে দুটি সংখ্যা যোগ করার জন্য বলা হবে। সংখ্যা ২টি যোগ করার পরে যোগফল নিচের বক্সে লিখে দিবেন। সর্বশেষ ‘খুঁজুন’ অপশনে ক্লিক করে দিবেন। এভাবেই কিন্তু আপনাদের পছন্দের খতিয়ান বের করতে পারবেন বা খুব সহজে কিছু মুহূর্তের মধ্যেই যাচাই করে নিতে পারবেন। আশা করি, খতিয়ান বের করার নিয়ম সম্পর্কে আপনারা বুঝতে পেরেছেন।
জমির খতিয়ান যাচাই করার ধরন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা
আপনাদের সাথে আজকে আমি মোট চারটি পদ্ধতি শিখিয়ে দিলাম, যে জমির খতিয়ান যাচাই সম্পর্কে কিভাবে আপনারা জমির খতিয়ান অনুসন্ধান (সার্চ) করতে পারবেন । সবার প্রথমে আমি আপনাদের সাথে যে পদ্ধতি সম্পর্কে আপনাদের শিখিয়ে দিয়েছি সেই পদ্ধতির মাধ্যমে আপনাদের জমির খতিয়ান নম্বর যদি জেনে থাকেন, তাহলে খুব সহজেই সেই নাম্বারের মাধ্যমেই খতিয়ানের তথ্য জানতে সহজেই অনুসন্ধান করে দেখতে পারবেন। তাছাড়া আপনারা ইচ্ছা করলে জমিনের দাগ নম্বর যদি আপনাদের কাছে থাকে বা আপনাদের মনে থাকে, তাহলে সেই দাগ নাম্বার লিখে তার পরেও সার্চ করে দেখতে পারেন কোন সমস্যা আছে কিনা। আর যদি এই গুলোর একটা ও না থাকে তাহলে আপনারা জমির মালিকের নাম লিখে অনুসন্ধান (সার্চ) করতে পারেন, তাহলে খুব সহজেই আপনারা পেয়ে যাবেন।
সর্বশেষে যদি আপনাদের কাছে এই গুলোর একটা না থাকে তাহলে আরো অন্যান্য মাধ্যম আছে যেমন জমির মালিকের পিতা বা স্বামীর নাম যদি জেনে থাকেন। তাহলে জমির মালিকের পিতা বা স্বামীর নাম দিয়ে অনুসন্ধান করে দেখবেন । এই তথ্যগুলো যদি আপনারা সঠিকভাবে সাবমিট করে তারপরে ঠিক আছে (ওকে) বাটনে ক্লিক করেন তাহলে অবশ্যই আপনারা খতিয়ান এর সমস্ত তথ্য পেয়ে যাবেন মুহূর্তের ভিতরে ।
আমাদের শেষ কথা
আজকে আমাদের আর্টিকেল এর মাধ্যমে খতিয়ান বের করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত ভালোভাবে জানতে পেরেছেন । আশা করি যে, আমাদের আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের কাছে অনেক ভালো লেগেছে এবং এর বিভিন্ন তথ্য পাওয়ার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটে সাথেই থাকুন আমাদের বিভিন্ন তথ্য প্রতিনিয়ত শেয়ার করা হয়ে থাকে। জন্ম নিবন্ধন সংশোধন অনলাইনে করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন আমাদের এইখানে।
আমাদের আজকের পোস্টটি ভালো লাগলে অবশ্যই আপনাদের বন্ধুদের কাছে শেয়ার করে দিবেন। তাহলে তারাও এই সকল বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পারবে এবং মানুষকে জানাতে পারবে। আমাদের এই ওয়েবসাইটটি বানানো হয়েছে শুধুমাত্র আপনাদের তথ্য আদান-প্রদান করার জন্য। আশা করি আমাদের সাথেই থাকবেন, আল্লাহ হাফেজ ।