ডিজিটাল মার্কেটিং কি ও ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্ব

ডিজিটাল মার্কেটিং কি

বর্তমানের কমার্স জগতে ডিজিটাল মার্কেটিং একটি বহুল পরিচিত টার্ম, এই ডিজিটাল যুগে ডিজিটাল মার্কেটিং অনেক ব্যবসায়ীকে লাভবান হতে সাহায্য করেছে। এখন প্রযুক্তির এতটাই প্রসার ঘটেছে যে ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে বিজনেসের প্রসার বেশি ঘটছে।

 

আজকের এই লিখায় ডিজিটাল মার্কেটিং কি এই বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।

 

ডিজিটাল মার্কেটিং কি ?

ডিজিটাল মার্কেটিং এমন এক ধরনের মার্কেটিং যা ইন্টারনেট এবং অনলাইন ভিত্তিক ডিজিটাল প্রযুক্তি যেমন ডেস্কটপ কম্পিউটার, মোবাইল ফোন এবং অন্যান্য ডিজিটাল মিডিয়া এবং প্ল্যাটফর্মগুলি পণ্য এবং সার্ভিস প্রচারের জন্য ব্যবহার করে।

 

১৯৯০ এবং ২০০০এর দশকে বিভিন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্যের প্রচারণার জন্য প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করে। ডিজিটাল মার্কেটিংকে অনলাইন মার্কেটিং ও বলে। এই প্রসেসে আপনি আপনার পণ্য বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করতে পারেন, যেমনঃ বর্তমানে অনেকেই ফেসবুকে লাইভ করে তাদের পণ্যের প্রচারণা করে, এটি ডিজিটাল মার্কেটিং এর উদাহরণ।

 

এখন মানুষ মার্কেটে গিয়ে সশরীরে কেনাকাটা করার থেকে অনলাইন শপিং এ বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে, আর যারা বিক্রেতা তারা ও অনেকভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে উপকৃত হয়, তাদের প্রচারণার খরচ অনেকটা বেঁচে যায়।

 

অনেক সময় দেখবেন যে, আপনার ফোনে চালডাল বা দারাজ থেকে মেসেজ এসেছে, বা কল এসেছে এগুলো ও ডিজিটাল মার্কেটিং এর অংশ, ডিজিটাল মার্কেটিং নন ইন্টারনেটের ডিভাইসকে ও নিজের আওতায় আনতে পারে।

 

ডিজিটাল মার্কেটিং এর মূল বিষয়গুলো কি কি?

সংক্ষেপে, ডিজিটাল মার্কেটিং বৈদ্যুতিক ডিভাইসগুলির মাধ্যমে পরিচালিত যে কোনও মার্কেটিং এর  পদ্ধতিকে বোঝায়। ডিজিটাল মার্কেটিং পরিচালনার প্রক্রিয়ায়, ব্যবসা ওয়েবসাইট, সার্চ ইঞ্জিন, ব্লগ, সোশ্যাল মিডিয়া, ভিডিও, ইমেল এবং অন্যান্য চ্যানেলগুলি গ্রাহকদের কাছে পৌঁছানোর জন্য অন্যতম উপায় হিসেবে কাজ করে। এই ইন্টারনেট রিলেটেড যে কোন প্রোগ্রামই ডিজিটাল মার্কেটিং এর মূল বিষয় হিসেবে কাজ করে।

আগের যে ট্র্যাডিশনাল মার্কেটিং ছিল, তা মুলত একমুখী ,কিন্তু সে তুলনায় ডিজিটাল মার্কেটিং বহুমুখী এবং গতিশীল, এর মাধ্যমে আপনি অনেক অল্প সময়ে আপনার সার্ভিসের চাহিদা বা রিভিউ বুঝতে পারবেন কিন্তু ট্র্যাডিশনাল মার্কেটিং এ তা সম্ভব হয়না।

 

ডিজিটাল মার্কেটিং ইন্টারনেট ইউজ করে সহজেই তাদের কাস্টমার , তাদের লোকেশন ঠিক করে সে অনুযায়ী তাদের সার্ভিস সেল করতে পারে।

 

 সফল ডিজিটাল মার্কেটিং  কৌশল সাধারণত অনলাইন বিজ্ঞাপন, সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশান এবং বিপণন, সোশ্যাল মিডিয়া বিপণন এবং ব্যবস্থাপনা এবং সামগ্রী তৈরি সহ বিভিন্ন পদ্ধতির সংমিশ্রণে গঠিত হয়।

 

কিভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং ট্র্যাডিশনাল মার্কেটিং থেকে ভিন্ন?

ডিজিটাল মার্কেটিং আর ট্র্যাডিশনাল মার্কেটিং এর মধ্যে পার্থক্য বের করা খুবই সহজ।

 

ট্র্যাডিশনাল মার্কেটিং অফলাইন চ্যানেল ব্যবহার করে, যখন ডিজিটাল মার্কেটিং ডিজিটাল চ্যানেল ব্যবহার করে। ট্র্যাডিশনাল মার্কেটিং প্রচারাভিযানে মূলত থাকে , বিলবোর্ড, মুদ্রিত বিজ্ঞাপন এবং মেইলার আর সেখানে একটি ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রচারাভিযানে  ব্যবসা এবং তার অফারগুলি প্রচারের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া, ব্লগ পোস্ট এবং ইমেল ব্যবহার করে থাকে।

 

ডিজিটাল মার্কেটিং কেন গুরুত্বপূর্ণ?

এখনকার বিজনেস সংস্থাগুলোতে, ডিজিটাল মার্কেটিং গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি নিম্নলিখিত সুবিধাগুলি অফার করে:

 

  •  একাধিক অনলাইন বিপণন কৌশল অবলম্বন করা যায়
  • দাম ডিজিটাল ডিজিটাল মার্কেটিং এর আরেকটি সুবিধা। এছাড়া আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং এ ফ্লেক্সিবিলিটি বেশি পাবেন, আপনি যখন ইচ্ছা যেভাবে খুশি আপনার প্রচার চালাতে পারবেন।
  • ডিজিটাল মার্কেটিং আপনার ছোট কোম্পানির বর্ধনে সহায়তা করে, কারণ এটি খরচ সাশ্রয়ী সি ই অ এর মাধ্যমে আপনার বিজনেস কে অডিয়েন্সের কাছে পৌছাতে সাহায্য করে। এর মাধ্যমে আপনি অল্প সময়ের মধ্যে আপনার বিজনেসের বিস্তার ঘটাতে পারেন।
  • সাশ্রয়ীভাবে প্রচার করা যায়
  • আপনি খুব ভালভাবে আপনার কাস্টমার টার্গেট করতে পারবেন এবং তাদের ইন্ডিভিজুয়াল পছন্দগুলোকে সহজেই বুঝতে পারবেন।
  • সময়মত যথার্থভাবে প্রচারণা করা যায়, যেমনঃ আপনি যে কোন সময় ফেসবুকে লাইভ করতে পারবেন, এর জন্য আলাদা খরচ হবে না, আলাদাভাবে কোন ইকুইপমেন্টের দরকার পড়েনা।
  • ডিজিটাল মার্কেটিং এ আপনি আপনার প্রচারণার কাজগুলোও সহজে ট্র্যাক করতে পারবেন।
  • এটি আপনার সময় অনেকভাবে সাশ্রয় করে।

 

ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রকারভেদ

ডিজিটাল মার্কেটিং বিভিন্ন আঙ্গিকে আমাদের কাছে ধরা দিয়ে থাকে, এর বিভিন্ন ধরণ রয়েছে, যেমনঃ

 

সার্চ  ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশান

সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশান, বা এসইও, প্রযুক্তিগতভাবে কোন বিপণন সরঞ্জাম নয় বরং নিজেই বিপণনের একটি ফর্ম। এর মাধ্যমে আপনি আপনার বিজনেস অপ্টিমাইজ করতে পারলে আপনি ভাল অডিয়েন্স পায়।

একটি বিজনেস ওয়েব পৃষ্ঠা অপ্টিমাইজ করার সময় নিচের বিষয়গুলো  বিবেচনা করতে হবেঃ

  • কন্টেন্টের গুণগত মান
  • ব্যবহারকারীর ব্যস্ততার পরিমাণ
  • মোবাইল-ফ্রেন্ডলিনেস
  • ইনবাউন্ড লিঙ্কগুলির সংখ্যা এবং গুণমান

 

সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং (এসইএম)

এসইএম সার্চ  ইঞ্জিনগুলির মধ্যে ওয়েবসাইটের ভিসিবিলিটি বাড়ানোর জন্য অনলাইন বিজ্ঞাপন প্রদান করে। এসইএম প্রায়শই এসইও এর সাথে একত্রে ব্যবহার করা হয়।

 

কনটেন্ট মার্কেটিং

কনটেন্ট মার্কেটিং এর আসল উদ্দেশ্য হল অডিয়েন্সকে আকর্ষণ করা। আপনাকে এমন পণ্য চুজ করতে হবে যাতে করে আপনার টার্গেটেড অডিয়েন্সের মনোযোগ আকর্ষণ করে, যেমনঃ আপনার টার্গেটেড অডিয়েন্স যদি হিন্দু হয় তাহলে আপনার পণ্যের কনটেন্টগুলো এমন হতে হবে যা হিন্দুদের কাজে লাগে, যেমনঃ আপনি শাখা,সিদুর, শাখ,পূজার সরঞ্জাম এমন কনটেন্ট এ আপনার প্রচার চালাতে পারেন।

 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মার্কেটিং

আপনি চাইলে আপনার ফেসবুক পেজ বা ইন্সটাগ্রাম পেজে আপনার পণ্য নিয়ে লাইভ ভিডিও করতে পারেন,এতে ভিউয়াররা আপনার পণ্য সম্পর্কে জানতে পারবেন, বর্তমানে এটি সবচেয়ে বেশি কার্যকরী ডিজিটাল মার্কেটিং।

 

পে-পার-ক্লিক মার্কেটিং

পে-পার-ক্লিক, বা পিপিসি, এর মাধ্যমে একটি প্ল্যাটফর্মে আপনার পণ্যের  বিজ্ঞাপন পোস্ট করা হয়এবং প্রতিবার যখন কেউ এটিতে ক্লিক করে তখন অর্থ প্রদান করা হয়। এতে করে সহজেই আপনার পণ্যের প্রচারণা এবং মার্কেট ও হয়ে যায়।

 

এফ্লিয়েট মার্কেটিং

এফ্লিয়েট মার্কেটিং কাউকে অন্য ব্যক্তির ব্যবসার প্রচার করে অর্থ উপার্জন করতে দেয়। আপনি প্রোমোটার হিসেবে কাজ করে আপনার পেজে আপনার একাউন্টে সেই পণ্য প্রোমট করে সেই পণ্যের মার্কেট তৈরি করে দিতে পারেন। এতি ডিজিটাল মার্কেটিং এর অনন্য একটি প্রকারভেদ।

 

ইমেইল মার্কেটিং

ডিজিটাল মার্কেটিং এর এটি এক অন্য তম প্রকার।এই সিস্টেমে আপনি ইমেইলে প্রমোশনাল মেইল সেন্ড করে আপনার পণ্যের প্রচার করতে পারবেন,তবে আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে যে আপনার মেইল ক্লিক করা হচ্ছে।

 

নেটিভ বিজ্ঞাপন

নেটিভ বিজ্ঞাপনে যে কোন সামাজিক মাধ্যমের মধ্যে মার্কেটিং উপকরণগুলি ব্লেন্ড করা হয় যেখানে, অন্তর্নিহিত বার্তা এবং বিপণনের উদ্দেশ্যগুলি সমানভাবে গুরুত্ব পায়।

 

ডিজিটাল মার্কেটিং কিভাবে বিজনেসের প্রসারতা সৃষ্টি করে?

ডিজিটাল মার্কেটিং  এখন যে  কোন ব্যবসায়ের সামগ্রিক মার্কেটিং কৌশলের প্রাথমিক ফোকাসগুলির মধ্যে একটি হওয়া উচিত। এর মাধ্যমে আপনি আপনার গ্রাহকদের সাথে একটি  সামঞ্জস্যপূর্ণ যোগাযোগ সৃষ্টি করতে পারেন, আপনার যোগাযোগ যত বেশি বাড়বে আপনার বিজনেস তত বেশি প্রসার হবে, কারণ যত বেশি আপনার পণ্য প্রচার হবে ততবেশি আপনার পণ্যের বাজার তৈরি হবে। আপনি এর মাধ্যমে ডিজিটাল ডেটা সংগ্রহ করতে পারেন এবং বুঝতে পারবেন যে আপনার কোন দিকটিতে ফোকাস করতে হবে। এছাড়া আপনি আপনার পণ্যের আন্তর্জাতিক  বাজার পেতে পারেন , কারণ ডিজিটাল মার্কেটিং ইন্টারনেটের মাধ্যমে আপনার পণ্য প্রচার করে, যা বিশ্বব্যাপী মানুষের কাছে সহজেই পৌঁছে যায়। এইভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং আপনার বিজনেসের প্রসারতা সৃষ্টি করে।

 

শেষ কথা

আজকেই এই লিখার মাধ্যমে ডিজিটাল মার্কেটিং কি? এই বিষয়ে বিস্তারিত ধারণা পেয়েছেন, তার সাথে এর প্রকারভেদ, এর প্রয়োজনীয়তা এবং এর মূল বিষয় বস্তু সম্পর্কে ও বিস্তারিত ধারণা পেয়েছেন, আশা করি আপনারা ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিষয়গুলো বুঝতে পেরেছেন।

 

বিভিন্ন তথ্য পাওয়ার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটে সাথেই থাকুন। আইডি কার্ড বের করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন আমাদের এইখানে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!