আইডি কার্ড বের করার নিয়ম | এন আইডি কার্ড ডাউনলোড

আইডি কার্ড বের করার নিয়ম

আইডি কার্ডের অর্থ হলো পরিচয়পত্র। আর এইখানে আইডি কার্ড বলতে এন আইডি কার্ডকে বুঝানো হয়েছে। এটি প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টের মধ্যে একটি, যা প্রত্যেক নাগরিকের থাকা আবশ্যক। বাংলাদেশ সরকার এন আইডি কার্ডের জন্য যোগ্য সকল মানুষকে একটি এনআইডি কার্ড প্রদানের লক্ষ্যে আপ্রাণভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশের নাগরিকদের এন আইডি কার্ড অর্জনের যোগ্যতা হল কমপক্ষে ১৮ বছর বয়স হওয়া।

 

বর্তমানে যে এন আইডি কার্ড প্রদান করা হয় তাকে বলা হয় স্মার্ট আইডি কার্ড।

 

এই আরটিকেল থেকে যা যা জানবো

এন আইডি কার্ড  কি?

১৮ বছর বয়সী সকল নাগরিকের জন্য এন আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক। সকল বাংলাদেশীকে একটি এনআইডি কার্ড ইস্যু করা হয় যা পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ক্রেডিট কার্ড এবং জমির মালিকানা নিবন্ধনের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি একজন নাগরিকের যাবতীয় পরিচয় যেমন, নাম, ঠিকানা, পিতা মাতার নাম, আইডি কার্ড নাম্বার, ছবি, এসব তথ্য বহন করে। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ জিনিস, এটি সব ধরনের কাজে লাগে যেমন, আপনি ভ্যাকসিনের জন্য নিবন্ধন করবেন বা কোন মোবাইল ব্যাংকিং এর জন্য একাউন্ট খুলতে হলে ও আইডি কার্ডের দরকার হয়।

 

২০০৬ সালে নরমাল কাগজে লেমিনেটেড করা এন আইডি কার্ড চালু হয়েছিল, তবে পরবর্তীতে তা বায়োমেট্রিক এবং মাইক্রোচিপ কার্ডে পরিণত হয়, এখন আমরা এই কার্ডই ইউজ করি,এর মেয়াদ ১৫ বছর।

 

স্মার্ট এন আইডি কার্ড আর এন আইডি কার্ড কি এক?

স্মার্ট ন্যাশনাল আইডি বা স্মার্ট এনআইডি অনলাইন থেকে পাওয়া জাতীয় পরিচয়পত্রকে বোঝায়। উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি সম্প্রতি ১৮ বছরে উপনীত হয়ে থাকেন, তবে আপনি একটি সাধারণ এনআইডি কার্ডের জন্য যাওয়ার পরিবর্তে অনলাইনে স্মার্ট ন্যাশনাল আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারেন। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন বা ইসি ১০ কোটি নাগরিককে স্মার্ট ন্যাশনাল আইডি কার্ড বা স্মার্ট এনআইডি বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সুতরাং আপনি যদি এখনও এনআইডি না পান তবে স্মার্ট এনআইডির জন্য আবেদন করুন।

 

সুতরাং স্মার্ট এন আইডি কার্ড আর এন আইডি এক নয়, সাধারণ এন আইডির জন্য অনলাইনে এপ্লাই করতে হয় না, এটির জন্য নির্বাচন অফিসে যেতে হয় এবং ফর্ম তুলতে হয়।

 

এন আইডি কার্ড পাওয়ার জন্য কি কি যোগ্যতা থাকতে হবে?

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১২২ অনুচ্ছেদ এবং ভোটার তালিকা আইন ২০০৯-এর ৭ নং ধারা অনুসারে একজন ব্যক্তির ভোটার হিসাবে নিবন্ধিত হওয়ার জন্য নিম্নলিখিত যোগ্যতা থাকতে হবে:

 

  • বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে
  • বয়স আঠারো বছরের কম হওয়া যাবেনা
  • একটি নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা হতে হবে।

 

এন আইডি কার্ড বের করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কি কি?

এন আইডি কার্ড বের করতে হলে যেসব কাজগপত্র দরকার পড়ে সেগুলো হল,

 

  • স্কুল সেকেন্ডারি সার্টিফিকেট
  • ডিজিটাল বার্থ সার্টিফিকেট/জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট
  • বাংলাদেশ পাসপোর্ট/ড্রাইভিং লাইসেন্স/টিন নম্বর।
  • ইলেকট্রিক বিল কপি বা কোন ইউটিলিটি বিল।
  • বাবা, মা, স্ত্রী, স্বামী পরিচয়পত্রের ফটোকপি।

 

এন আইডি কার্ড বের করার নিয়ম

এন আইডি কার্ড বের করা তেমন কঠিন কাজ নয়, খুব সহজেই আপনি এন আইডি কার্ড এপ্লাই করে তা উঠিয়ে নিতে পারেন।

 

এন আইডি কার্ড বের করার জন্য আপনাকে প্রথমে স্থানীয় নির্বাচন অফিসে যেতে হবে, অবশ্যই আপনি সাথে করে প্রয়োজনীয় যা কাগজপত্র তা সাথে করে নিয়ে যেতে হবে। আপনি নির্বাচন অফিসে গেলে আপনাকে একটি রেজিস্ট্রেশন ফর্ম  দেওয়া হবে, সেখানে আপনাকে আপনার নাম, আপনার পিতার নাম, মাতার নাম, ঠিকানা, ফোন নাম্বার, জাতীয়তা, জন্মতারিখ, এইসব কিছু তথ্য সরবরাহ করতে হয়, এইখানে  নামগুলো একবার বাংলায় আরেকবার ইংরেজিতে লিখতে হবে, তারপর সঠিকভাবে ফর্ম ফিল আপ করে তা জমা দিতে হবে, এখন যেহেতু অনলাইনে ফর্ম তোলা যায়, আপনি চাইলে ফর্মটির পিডিএফ নামিয়ে তারপর পূরণ করে স্থানীয় নির্বাচন অফিসে জমা দিতে হবে।

 

আপনি তিন ভাবে এন আইডি কার্ড বের করতে পারবেন, যেমনঃ

 

  • রেজিস্ট্রেশন স্লিপ ইউজ করে এই আইডি কার্ড বের করা
  • ফর্ম জমা দিয়ে এন আইডি কার্ড বের করা
  • অনলাইনে এপ্লাই করে এন আইডি কার্ড বের করা

 

রেজিস্ট্রেশন স্লিপ ইউজ করে এই আইডি কার্ড বের করা

আপনি যদি ফর্ম ফিল আপ করে রেজিস্ট্রেশন করে থাকেন তাহলে আপনাকে ফর্ম জমা দেওয়ার পর একটি স্লিপ দেওয়া হয়। আপনি ফর্ম জমা দেওয়ার পর নির্বাচন অফিস থেকে আপনাকে স্লিপ সহ তারিখ দিয়ে দিবে, আপনাকে সেই নির্ধারিত তারিখে স্লিপ নিয়ে যেখানে আইডি কার্ডের জন্য ছবি তুলে সেখানে যেতে হবে। সেই একই স্লিপ দিয়ে আপনি নির্বাচন অফিস থেকে আইডি কার্ড বের করতে পারবেন।

 

ফর্ম জমা দিয়ে এন আইডি কার্ড বের করা

এটি আসলেই গুরুত্বপূর্ণ , আপনি যদি রেজিস্ট্রেশন ফর্ম পূরণ না করেন তাহলে আপনি এন আইডি কার্ড বের করতেই পারবেন না, সে অনলাইন হোক বা অফলাইন, রেজিস্ট্রেশন না করলে আপনি এন আইডির জন্য মনোনীতই হবেন না।

 

 অনলাইনে এপ্লাই করে এন আইডি কার্ড বের করা

অনলাইনে সাধারণত স্মার্ট কার্ডের জন্য রেজিস্ট্রেশন করা হয়, এখন যে সব কার্ড এন আইডি কার্ড ইস্যু করা হয় তার সব কটিই স্মার্ট কার্ড। আপনি অনলাইনে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। ঠিক মত রেজিস্ট্রেশন করলে আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ধাপে এন আইডি কার্ড বের করতে পারবেন।

 

বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি কার্ড প্রিন্ট আউট করার জন্য আপনার কী কী প্রয়োজন?

আপনি এন আইডি কার্ড বের করার জন্য নিম্নলিখিত কাগজপত্র প্রিন্ট আউট করতে হবে, যেমনঃ

 

  • ভোটার রেজিস্ট্রেশন ফর্মের স্লিপ নম্বর
  • জন্মতারিখ
  • আপনার যে কোনও মোবাইল নম্বর ( সিম অবশ্যই নিবন্ধিত হতে হবে)

 

 এনআইডি কার্ড পাওয়ার প্রক্রিয়া

এনআইডি কার্ড পেতে আপনাকে কিছু প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। উল্লেখ্য যে,  এনআইডি  সব এলাকায় বিতরণ করা হয় না। বর্তমানে বাংলাদেশের ইসি কয়েকটি এলাকায় এনআইডি বিতরণ করছে। সুতরাং আপনাকে চেক  করতে হবে যে আপনি বর্তমানে যে অঞ্চলে বিতরণ চলছে তার অন্তর্গত কিনা।

 

এনআইডি কার্ড পাওয়ার সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াগুলি নীচে তালিকাভুক্ত করা হল:

 

  • আপনাকে এলাকায় জাতীয় কার্ডের ইস্যুর তারিখ চেক করতে হবে।
  • যেখানে এন আইডি কার্ড বিতরণ করা হয় সেই বিতরণ কেন্দ্র টি খুঁজে বের করে সেখান থেকে এন আইডি কার্ড সংগ্রহ করতে হবে।
  • অন্যথায়, রেজিস্ট্রেশন স্লিপটি কেন্দ্রে নিয়ে যান, সেখানকার লোকজন ই আপনাকে পরবর্তী প্রসেস বলে দিবে।

 

কিভাবে এনআইডি কার্ড ইস্যুর তারিখ এবং কেন্দ্র চেক করবেন?

সাইট চেক করার মাধ্যমে

 

এনআইডি কার্ডের কেন্দ্র এবং ইস্যুর তারিখটি চেক করার মাধ্যমে আপনি এন আইডি কার্ড পাওয়ার  করতে হবে যাতে আপনি এটি পাওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেন। আপনি যদি অফলাইনে চেক করতে চান, তাহলে আপনি স্থানীয় নির্বাচন অফিসে গিয়ে খোঁজ নিতে পারেন, আপনি যদি অনলাইন থেকে এনআইডি কার্ড ইস্যুর তারিখ এবং এনআইডি কার্ড বিতরণ কেন্দ্র চেক করতে চান তাহলে  আপনি  সাইট থেকে চেক করতে পারেন সাইট টি হল বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন ওয়েবসাইট।

 

সাইটটি দেখার পরে আইডি কার্ড ডিস্ট্রিবিউশন অপশনটি সার্চ করুন এবং সেখান থেকে প্রদত্ত সমস্ত তথ্য পরীক্ষা করুন। তারপরে আপনাকে আপনার এনআইডি কার্ড নম্বর বা রেজিস্ট্রেশন স্লিপ নম্বর দিতে হবে এবং আপনার জন্ম তারিখ দিতে হবে এবং ক্যাপচা কোডটিও পূরণ করতে হবে। এই সব পরে, সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন , এইভাবে আপনি আপনার এন আইডি কার্ড ইস্যুর তারিখ আর কেন্দ্র চেক করতে পারবেন।

 

যদি আপনার এন আইডি কার্ডের তারিখ ইস্যু না হলে ওয়েবসাইটের নিচে লিখা থাকবে আপনার কার্ডের তারিখ ইস্যু করা হয়নি, সেক্ষেত্রে আপনার কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।

 

মোবাইলে এস এম এস করার মাধ্যমে

আপনি চাইলে মোবাইল থেকে এস এম এস করে আপনার এন আইডি কার্ড ইস্যু করার তারিখ এবং কেন্দ্র চেক করতে পারবেন, এস এম এস ফরম্যাটটি হলঃ

 

এস সি SC< স্পেস space>এফ F< স্পেস Space> রেজিস্ট্রেশন স্লিপ নাম্বার Registration Slip Number<স্পেস space>ডি D< স্পেস space>YYYY-MM-DD আপনার জন্মতারিখ।

 

আপনার মোবাইলে মেসেজের মাধ্যমে আপনাকে আপনার কার্ড ইস্যুর তারিখ এবং কেন্দ্র জানিয়ে দেওয়া হবে, যদি ইস্যু না হয় তা ও জানিয়ে দেওয়া হবে।

 

শেষ কথা

আজকের এই লিখার মাধ্যমে আপনার আইডি কার্ড বের করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।

 

বিভিন্ন তথ্য পাওয়ার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটে সাথেই থাকুন। অঙ্গীকারনামা লেখার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন আমাদের এইখানে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!